অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ

 

Hair fall


শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে একটি বিশেষ অঙ্গ হল সেই চুল সেই চুল বিভিন্ন কারণে পড়ে যেতে পারে।

আর যখন চুল পড়া শুরু হয় তখন থেকেই আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়ি বিভিন্ন ঔষধ ব্যবহারের অথবা বিভিন্ন তেল ব্যবহার। তবে যেনতেন তেল ব্যবহার করে আমরা আমাদের চুলকে ক্ষতির দিকে ঢেলে দেই।
আমরা যখন চুলের যত্ন নিতে ভুলে যাই তখন আমাদের সুরগুলো এলোমেলো এবং অগোছালো হয়ে যায়। আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব কিভাবে আপনি প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপায়ে চুল পড়া রোধ করবেন এবং আপনার চুলকে শরীর সুস্থ রাখবেন।

চুল পড়ার লক্ষণ

চুল মানবদেহের একটি মৃত কোষ এবং এই কোষের কোন অনুভূতি নেই। সাধারণত একজন মানুষের দৈনিক চার থেকে পাঁচটা চুল পড়তে পারে এটা স্বাভাবিক। তবে দৈনিক ৫০থেকে ১০০ টি চুল পড়লে তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এবং আপনি এই চুলপড়া কে একটি অস্বাভাবিক চুলপড়া হিসেবে বেছে নিতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে বাজে ঔষধ বা কোন তেল ব্যবহার করে চুলের ক্ষতি বয়ে আনবেনা চেষ্টা করবেন বিশেষজ্ঞ কোন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে এর সমাধান করতে।

চুল পড়ার কারণ সমূহ

১. পুষ্টিকর খাবারের অভাবে আপনার চুল পড়ে যেতে পারেন আপনি যদি নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার না কারণ সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরের অবরোধের পাশাপাশি আপনার চুলের অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে এবং প্রয়োজনে আপনার মাথার চুল গুলো আস্তে আস্তে পড়ে যেতে পারে। ২. নিয়মিত চুলের যত্ন নেওয়ার কারণে চুল পড়ে যেতে পারে এক্ষেত্রে আপনি চুলের প্রতি যথেষ্ট যত্নবান হবেন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি দিয়ে প্রতিদিন চুল পরিষ্কার করবেন যেন আপনার চুলে ময়লা না লেগে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ৩. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা মানসিক অবসাদের জন্য আপনার চুল পড়ে যেতে পারে সেক্ষেত্রে আপনি যদি সবসময় দুশ্চিন্তা দেখেন আপনার চুল পেকে যেতে পারে। ৪. বয়স জনিত কারণে শরীর বেঁকে যেতে পারে যাদের বয়স স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাদের চুল পেকে যাবে এটাই স্বাভাবিক। ৫. ক্যান্সার চিকিৎসায় কেমোথেরাপি দেওয়ার পর আপনার চুল পড়ে যাবে। এবং এই চুল গজাতে অনেক দিন সময় লাগতে পারে আবার অনেকে এটা জীবনের নাও হতে পারে। ৬. অনেক মহিলা আছে যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেট ব্যবহার করে থাকেন সেক্ষেত্রে তারা এই চুল পড়ার মতো অবস্থার পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন তাই আপনার যদি কখনো চুল পড়ে তাহলে আপনি এই বিষয়টা খেয়াল রাখবেন। ৭. শরীরে ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যেতে পারে। সাধারণত ভিটামিন-ই যদি শরীরে কম থাকে সে ক্ষেত্রে আপনার চুল পড়ে যাবে এবং অন্যান্য ভিটামিনের অভাব ও পড়ার জন্য দায়ী। ৮. অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় হরমোনজনিত কারণে চুল পড়ে যায়। আপনার শরীরে যদি হরমোনের পরিবর্তন হয় সেক্ষেত্রে আপনার চুল পড়ে যেতে পারে তাই যখন হরমোন পরিবর্তন হবে তখন ওই দিকটা খেয়াল রাখবেন যেন বেশি পরিমাণ চুল পুড়ে যেতে না পারে।

চুল পড়া রোধে করণীয়

* সাধারণত পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব এই মাথার চুল পড়ে থাকে তাই আপনাকে চুল পড়া বন্ধ করতে হলে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে যাতে আপনার শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়।
* চুলকে সবসময় পরিষ্কার এবং খুশকি মুক্ত রাখতে হবে যাতে চুল সবসময় সতেজ থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
* অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা জনিত কারণে যখন চুল পড়ে যায় তখন আপনাকে দুশ্চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
দুশ্চিন্তা চুল পড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয় তাই আপনি যদি চুল পড়া জনিত সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যান সে ক্ষেত্রে ডাক্তার আপনাকে দুশ্চিন্তা কমানোর ঔষধ দিবে অথবা বেশি পরিমাণ কমানোর পরামর্শ দিবেন তাই চুল পড়া কমাতে চাপমুক্ত থাকতে হবে। * অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত ঘুমায় না যার ফলে তাদের মাথার চুল পড়ে যেতে পারে কারণ গুম মানবদেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। তাই পর্যাপ্ত ঘুম এবং সঠিক সময়ে ঘুম আপনার জন্য খুবই জরুরী। * অনেক সময় দেখা যায় চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করে থাকেন তবে এই রং ব্যবহারের ফলে আপনার চুল পড়ে যেতে পারে অথবা অকালে আপনার চুল পেকে যেতে পারে। তাই এ ধরনের রঙ ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন এবং প্রাকৃতিক রং নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবেন। * আমাদের মধ্যে যাদের চুল একটু কোঁকড়া তারা অনেকে চেষ্টা করেন চুলগুলো সোজা করার জন্য সে ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেন তার মধ্যে একটি হচ্ছে রাসায়নিক পদ্ধতিতে চুলের জন্য খুবই মারাত্মক ঝুঁকির কারণ। এ ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনার শরীরকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে ক্ষতি দিকে ঠেলে দিবেন না।
* অনেকেই আছে একাধিক পরিমাণের শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকে এবং ইচ্ছা হলেই সেম্পু পাল্টে থাকেন যেটা আপনার চুলের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং এটা পড়ে যেতে পারে।
* দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক ধরনের ঔষধ ব্যবহার করে থাকি বা খেয়ে থাকে যেগুলো ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে আমাদের মাথার চুল পড়ে যেতে পারে। তাই যে কোন ওষুধ ব্যবহারের পূর্বে আমরা এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন হব এবং জানার চেষ্টা করব যে এর কারণে মাথার চুল পড়ে যায় কিনা।
* অনেক সময় দেখা যায় পানি কম খাওয়ার কারণে চুল পড়ে যায়। তাই যাদের পানি কম খাওয়ার অভ্যাস আছে তারা চেষ্টা করবেন নিয়মিত বিরতিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা।

চুল পড়া রোধে ঘরোয়া উপায়

নারিকেলের দুধ দিয়ে চুলের যত্ন চুল পড়া রোধ এবং চুলের যত্নে নারিকেল দুধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি চুলের পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান প্রদান করে থাকে যা আপনার শরীরের জন্য দরকারি।
এর ভিতরে রাসায়নিক উপাদান না থাকায় ব্যবহারে কোনো ঝুঁকি নেই। যেভাবে ব্যবহার করবেন: নারিকেলের দুধ আপনি নিকটবর্তী কোন দোকান থেকে কিনতে পারেন অথবা ঘরোয়া পদ্ধতিতে বানাতে পারেন।

এই দুধ প্রতিদিন দুইবেলা সামান্য পরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে চুলে মাখবেন এবং আধা ঘন্টা পর চুল ধুয়ে ফেলে আপনার চলে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে এবং চুল হবে সতেজ।

চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
আদিকাল থেকে পরিচিত এবং বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে অনেক ব্যবহৃত নিম গাছ। এই গাছের ছাল বা পাতা ব্যবহারের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে থাকে। তেমনি আপনি চুলের যত্নেও এই গাছের পাতা ব্যবহার করতে পারেন। নিমের পাতা উচ্চ পরিমাণে ফ্যাটি এসিড থাকাই মাথার চুলের জন্য এটা খুবই উপকারী। খুশকি জনিত কারণে চুলের গোড়া নরম হয়ে গেলে সেক্ষেত্রেও আপনি নিম পাতা ব্যবহার করতে পারবেন।
যেভাবে ব্যবহার করবেন :

নিমপাতা বেটে পানির সাথে মিশিয়ে রস করবেন এবং এই রস প্রতিদিন এক বেলা সাধারণ নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে চুলে মাখবেন। এভাবে নিয়মিত ১৫ দিন ব্যবহারের ফলে আপনি একটি কার্যকরী ফলাফল পাবেন। চুলের যত্নে পেঁয়াজের ব্যবহার :

আপনার চুলকে দ্রুত বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে পেঁয়াজের রস। পেঁয়াজের মতো প্রাকৃতিক উপাদান আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত দরকারি যা আপনার চুলকে ঘন করতে সহায়তা করবে। পেঁয়াজ ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকাই আপনার চুল অকালে পাকা রোধ করবে।
পেঁয়াজের রস যেভাবে ব্যবহার করবেন :

পেঁয়াজ বেটে রস করবেন এবং এর সাথে সামান্য পরিমাণে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নেবেন। বাড়িতে অলিভ অয়েল না থাকলে আপনি যেকোন তাল মিলাতে পারেন যেটা পুষ্টিকর। পেঁয়াজের সাথে ইতালির মিশ্রন সপ্তাহে দুই থেকে চার বার মাথায় ব্যবহার করলে আপনার চুল হবে গণ এবং চুলের খুশকি দূর হবে। এভাবে আপনি চুলের যত্ন করতে পারবেন।
বেলা শেষে বলা যায়:

মানুষ সৌন্দর্যের পূজারী তাই আপনি আপনার সৌন্দর্য কে ঠিক রাখতে যথাযথভাবে চুলের যত্ন নিবেন কেননা চুল সৌন্দর্যের অন্যতম একটি উপাদান।
ফ্রি

Post a Comment

Previous Post Next Post